বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫
কাদেরী টাইমস কলকাতা মেদিনীপুর সাহিত্য ইসলামিক রাজ্য দেশ আন্তর্জাতিক খেলা সম্পাদকীয় বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, ভ্রমণ ই – পেপার ও ম্যাগাজিন
সম্পাদকীয়

হজরত ফাতেমা জাহেরা (আঃ) এর পবিত্র জীবন: দ্বীনি সমাজ গঠনের অনুপ্রেরণা

লেখক :রাজা আলী _

পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নারী হলেন মা ফাতেমা জাহেরা সাঃ। ঐশী মহিমা এবং পিতামাতার কারণে তিনি এমন এক সমুন্নত চরিত্রে র নারী,যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে দুর্লভ।অথচ এই মহিমান্বিত নারীর খুব সংক্ষিপ্ত জীবন এবং শেষ জীবনের নিঃসীম দুঃখ-যন্ত্রণা ও মৃত্যু খুব ই বেদনা বিধুর।এই দুঃখ যে কোনো  মোমিন হৃদয়কে শোকসাগরে নিমজ্জিত করে।তাই ফাতেমা জাহরা সাঃ এর শোক আজ পৃথিবীর অলিতে গলিতে পালিত হচ্ছে।
     বিশিষ্ট আলেম দের তাগিদ এবং মোমিন হৃদয়ের আগ্রহে আজ প্রতিটি দেশেই পালিত হচ্ছে আইয়ামে ফাতেমিয়া। কিন্তু আইয়ামে ফাতেমিয়া র মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে নানা তাৎপর্য মন্ডিত দিক।সেই দিকগুলি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। আইয়ামে ফাতেমিয়াকে সচেতন হৃদয়ে লালন করতে পারলে এক দিকে যেমন মোমিন হৃদয়ের আর্তি পরিপূর্ণ হবে,অন্যদিকে তেমনি সমাজ গঠনের দাবি পূর্ণ হবে।
    ফাতেমা জাহেরা সাঃ এর জীবন বিচিত্র গুণে গুণান্বিত।তাই আইয়ামে ফাতেমিয়া র নানা দিক অন্বেষণ করা যায়।যেমন:
      ১.আইয়ামে ফাতেমিয়া আহলে বাইত প্রেমীদের কাছে গভীর শোক ও আযাদারীর তাৎপর্য বহন করে,
     ২.আইয়ামে ফাতেমিয়া ফাতেমা যাহরা সাঃ এর খুব সংক্ষিপ্ত জীবন এবং মৃত্যু-রহস্যের জটিল জাল সকলের নিকট উন্মোচন করে,
    ৩.আইয়ামে ফাতেমিয়ার   ্মা ফাতেমা জাহেরা সাঃ এর জীবন দর্শনের আলো  সমাজকে আলোকিত করে।
বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে আমরা ফাতেমা জাহেরা সাঃ এর জীবন দর্শনের আলোকে সমাজকে আলোকিত করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।
     চারপাশের মানুষ জন নিয়েই আমাদের সমাজ জীবন গড়ে উঠেছে।আর আল্লাহ রব্বুল আলামীন দ্বীনে ইসলামের মধ্যে এমন কিছু নেয়ামত দান করেছেন,যে নেয়ামতগুলি সমাজ গঠনের আদর্শ ও মডেল হিসাবে বিবেচিত।ফাতেমা জাহেরা সাঃ এমন ই এক নেয়ামত,যার দ্বারা দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ তা পেয়েছে। আল্লাহর রাসুল নিজেই বলেছেন–“*ফাতিমা জান্নাতে র নারীদের নেত্রী এবং তিনি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয়”(বিহারুল আনোয়ার)*।অর্থাৎ আল্লাহর রাসুল এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ফাতেমা এমন এক ঐশী নারী যাকে তিনি নিজেই সব থেকে গুরুত্ব দিতেন এবং ভালোবাসতেন। সুতরাং আল্লাহর বান্দাদের উচিত ফাতেমা কে গুরুত্ব দেওয়া এবং ভালোবাসা।আর আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁকে জান্নাতে র নেত্রী র মতো যখন সর্বোচ্চ সম্মান দান করেছেন,তখন বোঝা যায় যে,তাঁকে দ্বীনি সমাজ গঠনের কান্ডারী হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।
      মা ফাতেমা জাহরা সাঃ ইবাদতের ক্ষেত্রে এক অনুকরণ যোগ্য নারী ছিলেন। সাংসারিক কাজ সুসম্পন্ন করে, সন্তান দের লালন-পালন করেও তিনি দীর্ঘক্ষণ আল্লাহর আরাধনায় নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তাঁর ইবাদাত সম্পর্কে ইমাম হাসান আঃ বলেছেন –“*আমার মা ফাতিমা আল্লাহর ইবাদাতে এত বেশি মগ্ন থাকতেন যে, তাঁর পায়ের পাতা ফুলে যেতো”(বিহারুল আনোয়ার*)।এই হাদিসে ফাতেমা জাহেরা সাঃ এর ইবাদাতে র মাধুর্য ফুটে উঠেছে। ইবাদাতের মধ্যে যে মিষ্টতা ও মধুরতা লুকিয়ে আছে,তা আমরা তাঁর ইবাদত থেকে সহজেই বুঝতে পারি।তাই আমাদের উচিত তার ইবাদত কে নিজেদের জীবনে অনুকরণ করা এবং নিজেদের সমৃদ্ধ করে একটি দ্বীনি সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
      ইসলামী সমাজ গঠনের আদর্শ লুকিয়ে রয়েছে নারীদের শালীনতা রক্ষার মধ্যে।আর পর্দা হলো এক্ষেত্রে অদ্বিতীয় উপায়।মা জাহেরা নারী জাতির আব্রু রক্ষার জন্য নিজের জীবনকে মডেল হিসাবে নির্মাণ করেছেন।তাই সর্বোত্তম নারীর গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, নারীদের উচিত কেউ যেনো তাকে না দেখে,বা সে কাউকে না দেখে।কারণ পর্দা ঈমানের অংশ।তাই পর্দা ব্যতীত কোনো নারী র ঈমান পরিপূর্ণ হয় না।তাই আমাদের নারীদের কেও ফাতেমা জাহেরা সাঃ এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে হবে।তবেই সুস্থ ও সুন্দর একটি দ্বীনি সমাজ গড়ে উঠবে।এই কারণেই ইমাম খামেনেয়ী বলেছেন–“*আমাদের উচিত ফাতিমা* *জাহরা সাঃ এর পবিত্র জীবন কে গভীর মনোযোগে অনুধাবন করা।তার জীবন কে নতুন এক* *দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা এবং তাঁর মহিমান্বিত আদর্শকে আমাদের জীবন ধারার প্রকৃত মডেল হিসাবে গ্রহণ করা প্রয়োজন “

লেখক: রাজা আলী
গৃহ শিক্ষক। ডিগ্রি:বি.এ , বাংলা অনার্স
.এম.এ , কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়.বি.এড।
উঃ ২৪ পরগণা।

SHARE

Related posts

ঈদ: একতা ও সাম্যের প্রতীক

Qadri Times

দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে কেন পতিতালয়ের মাটি ব্যবহার করা হয়?

Admin@sangba

Durga Puja 2023

Admin@sangba

Leave a Comment

হোম
ট্রেন্ডিং
ভিডিও
ই-পেপার
যোগাযোগ